মিশেল ওবামা স্মৃতিকথা “Becoming”, বারাক ওবামা ছিলেন জীবনে আশা সুনামির মতো

মিশেল ওবামা স্মৃতিকথা “Becoming” এ জানালেন “শুরুতে বারাক ওবামা ছিলেন জীবনে আশা সুনামির মতো “ 

মিশেল ওবামা  উনার হাজবেন্ড  বারাক ওবামার সঙ্গে ত্রিশ বছরের সম্পর্ক  বিবাহ পরামর্শ দিয়ে শক্তিশালী হয় এ উঠেছিল । ছাপ্পান্ন বছর বয়সি প্রথম মহিলা মিশেল ওবামা স্মৃতিকথা  “Becoming” এর সর্বোচ্চ বিক্রয় খুব বিখ্যাত হয়ে পড়ে সেখানে উনি এবং উনার স্বামী কি কি অসুবিধার সম্মুখীন  হয়েছিলেন তার বিবরণ দেওয়া হয় ।

উনিশশ বিরানব্বই সালে বিয়ের পর থেকেই তাদের একে অপরের সঙ্গে অপলক প্রতিশ্রুতি থাকে । জীবনে অসুবিধা তখনই দেখা দেয় যখন উনি গর্ভবতী হতে পারছিলেন না এবং তারপরে উনার দুটো মেয়ে মালিয়া এবং সাসা জন্মানোর পরে । 

শ্রীমতি ওবামা প্রকাশ করলেন  যে উনার গর্ভস্রাব হয় এবং মেয়েদুটোকে ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন এর দ্বারা গর্ভবতী করানো হয় । দুটো মেয়ে জন্মানোর পর দম্পতিদের জীবন ব্যালেন্স করা তারমধ্যে উনার উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আইনজীবী ক্যারিয়ার এবং উনার স্বামীর নেতা হিসেবে কর্মজীবন এবং  তারমধ্যে নতুন মা বাবা  হয় জীবন এ খুব চাপ বেড়ে যায় । 

 উনার নেটফ্লিক্সের ডকুমেন্টারি “Becoming “ উনার মা হিসেবে আগের জীবনের  ছবি প্রতিফলিত হয়. উনি বলেন “ মিস্টার ওবামা খুব আলাদা ছিলেন, উনি আমার থেকে খুবই আলাদা ছিলেন, তুমি আমাকে অনেক দিক দিয়ে চ্যালেঞ্জ  করতেন,  আমি জানতাম উনি আমার পেছনে আসা  সুনামির মতো, আমি যদি আমার কাজ একসঙ্গে না করতাম ,তাহলে আমি বয়ে যেতাম “। আমি শুধু উনার ড্রিমের একটা উপাঙ্গ হয়ে থাকতে চাইছিলাম না । সেটাই আমাকে চাপ দিয়েছে কাজ করার চিন্তা করার এবং জীবনে আইনজীবীর কাজ ছাড়া নির্ণয় নেওয়ার ।

মিশেল ওবামা স্মৃতিকথা “Becoming”

Image Credit Michelle Obama Twitter

উনার জীবনের সংক্রমণগত দিনগুলো মনে করে তিনি জানালেন যে পরিবার বড় হওয়ার জন্য অনেক ছাড় তৈরি করেছিলেন । 

উনি বললেন “আমার সম্পর্ক ব্যারাকের সাথে অংশীদারিত্ব ছিল” । “আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে নিজেকে উন্নত করতে হবে যদি এই একগুঁয়ে মানুষের সাথে সমান উত্তর দিতে হয় ।  নিজেকে একটা এমন জায়গাতে নিয়ে দাঁড়া  করাতে হবে যেখানে  আমি কনফিডেন্ট মনে করি এবং ওর সমতুল্য  হয়ে কাজ করতে পারি” ।

“ দুটো মেয়ের জন্মের পরে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন  হয়েছিল” । কিছু একটা দিতে যেটা সত্যিই খুব কঠিন করে তুলেছিল  সেটা হচ্ছে আমার স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা । উনি আমাকে  চাকরি ছাড়তে বলেছেন  বলেই  যে আমি  চাকরি ছেড়েছি  তা নয়, আমার মনে হয়েছিল আমি সবগুলো কাজ একসঙ্গে করতে পারবোনা । সুতরাং আমার স্বপ্নকে ছাড়তে হবে ।”

মিশেল ওবামা স্মৃতিকথা  “Becoming”এবং বইমেলাতে উনার  ম্যারেজ কাউন্সেলিং নিয়ে খুলে কথা বলেছেন । মডারেটর  গাইলে কিংএর সঙ্গে কথা বলার সময় মেনে নিয়েছিলেন ,উনি প্রথমে ভেবেছিলেন যে কাউন্সিলিং শুধু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ঠিক করবে ।

“কাউন্সিলিং আমাকে সাহায্য করেছিল সেটা বুঝতে যে নিজের বিবাহিত জীবনের  মধ্যে কি করে খুশি থাকতে পারে” ,কিন্তু কঠিন ছিল ,খুবই কঠিন । খুবই কঠিন ছিল দুটো জীবনকে একসঙ্গে মিলিয়ে রাখতে ।” তিনি আরো  বললেন “ আমি ব্যারাক কে নিয়ে গিয়েছিলাম কাউন্সিলিংয়ে যাতে ওরা ব্যারাক কে  ঠিক করতে পারে । তারপরে  ওরা আমার দিকে  তাকায়, তখন আমি জাস্ট বলে উঠলাম তোমরা আমার সাথে কেন কথা বলছো আমি ঠিক  আছি, প্রবলেম ওর “।

বিবাহ কাউন্সিলের সাহায্য নিয়ে  মিসেস ওবামা নিজেকে মনে করালেন , যে নিজের জীবনে সুখী থাকার কথা  ভোলা উচিত নয়  । “আর একটা জিনিস আমি শিখতে পেরেছি এবং এটা আমাদের বিবাহিত জীবনকে সাহায্য করেছে এবং সেটা ছিল আমার খুশির জন্য ওর উপরে নির্ভর না থাকা” । 

আমার সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগত যখন  ব্যারাক নিজেকে বেশি গুরুত্ব দিতেন,আমাদের যখন বাচ্চা হল উনি যখন জিমে ছিলেন । আমি জাস্ট ভাবতাম “তোমার কাছে  ব্যায়াম করার এ তো  সময় কি করে হয় “ । সুতরাং আমার কাছে ছিল ওর প্রতি রাগ না করে নিজে জিমে ভর্তি হওয়া” । 

মিসেস ওবামা একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন  ” আমি আমার বিবাহিত জীবন নিয়ে খুলে বলতে চাই কারণ আমি আমার পাঠকদের সেটা মনে করিয়ে দিতে চাই যে কোন বিবাহিত জীবন  ই পারফেক্ট নয় ।”

 “ কারন আমরা  জগতের আদর্শ সুতরাং সবাইকে ভালো করে বোঝানো উচিত যদি তুমি একটা বিবাহিত জীবনে  কিছু সময় থাকার পর এরকম  আসে  যে তুমি বিবাহিত জীবন থেকে বের হতে চাও সেটা সাধারণ ব্যাপার,  কারণ আমি সেইভাবেই  অনুভব করেছিলাম”। 

দুই হাজার আঠার সালে ডিসেম্বর এ জিমি ফ্যালন এর টু নাইট শো তে বলেছিলেন “প্রতিটি  ম্যারেজ কাজ করা দরকার” । অনেক যুবক যুবতীরা আমার আর ব্যারাক দিকে তাকিয়ে থাকে এবং ওরা মনে করে ইয়েস আমরাও এরকম সম্পর্কের লক্ষ্য চাই ।” 

“ কিন্তু আমি যুবক-যুবতীদের চাই  যে এদের বিবাহিত জীবন কাজ করুক । এমনকি সবচেয়ে ভালো বিবাহিত জীবনের দরকার একসঙ্গে কাজ করা ।”

“আমি চাইনা যে ছেলেমেয়েরা অল্পেতে হার মানে । আমি অলওয়েজ বলি যদি তুমি পঞ্চাশ বছর ধরে বিবাহিত এবং তার মধ্যে দশটি বছর খারাপ  যায় তাহলে  ও তুমি  বুঝতে পারো যে তোমরা ভালো করছো  কিন্তু অন্যরা সেটা খারাপ দিকটা  তুলে ধরে ।”

মিশেল ওবামা স্মৃতিকথা  “Becoming” নেটফ্লিক্স ডকুমেন্টারি  তাদের জীবনের কিছু সুন্দর মুহূর্তের বিবরণ দিয়েছে । প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উনার স্ত্রীর বইমেলাতে বই বিক্রির সময় একসময় মজা করে বললে “এটা সত্যিই খুব মজার বিষয় ছিল একে আমাদের জীবনের গল্পগুলো বলতে  সোনা , কিন্তু কিছু সময় আমার মনে  হত না এক মিনিট দাড়াও , সেটা এরকমভাবে হয়নি যেরকম ভাবে তুমি বলছো  ।”

দুজন একসাথে হাত ধরে ওয়াশিংটন ফেরার সময় মিসেস ওবামা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন “এটিকে এমন স্টোরি যে তুমি দেখতে চাও “, তার উত্তরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মিষ্টি হেসে বললেন ,”হ্যাঁ তুমি খুব ভালো গল্প বলতে পারো” ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *